Dhaka ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৭ দিনের ব্যবধানে ২০-৩০ টাকার কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা কেজি

উজ্জ্বল কুমার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট ০৩:৩৬:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
  • / ৪০ বার পঠিত হয়েছে

নওগাঁর ১১ উপজেলার হাটবাজারে হঠাৎ করে বেড়েছে২০-৩০ টাকার কাঁচা মরিচের দাম ২৪০ টাকা কেজি। ৭ দিনের ব্যবধানে প্রায় ৬ থেকে ৮ গুন দাম বেড়েছে এই কাঁচা পণ্যটির । বর্তমানে খুচরা বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নওগাঁ পৌর খুচরা বাজার ও সিও অফিস ও নওগাঁ নওহাটার মোড় চৌমাশিয়া বাজারে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে জমি থেকে কাঁচামরিচ তুলতে পারছেন না চাষিরা। এছাড়াও জমিতে পানি জমে মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর কারণে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে গেছে। এতে দাম কিছুটা বেড়েছে।

জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও নওগাঁর বিভিন্ন হাটবাজারে কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা আর খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৪০টাকা কেজি দরে। বর্তমানে সেই কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা আর খুচরা বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। এদিকে কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা।

শহরের সিও অফিস বাজার করতে আসা মাসুদ রানা বলেন, যে মরিচ এক সপ্তাহ আগে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনেছি ,সেই মরিচ আজ ২৪০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। কালকেও ১২০টাকা কেজি নিয়ে গেছি অথচ আজকে দ্বিগুণ দাম। বাজারের যে অবস্থা মনে হচ্ছে কাল পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি হবে।

বাজার করতে আমা আরেক ক্রেতা ফিরোজ হোসেন বলেন, বর্ষার কারণে গাছ নষ্ট ও সরবরাহ কম হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতি তো এখনো তৈরি হয়নি যে বাজারে মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। নিয়মিত বাজারে অভিযান চালানো হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে না।

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ৯ নম্বার চেরাগপুর ইউনিয়ানের ৯ নম্বার ওর্য়াডের চৌমাশিয়া, নওহাটা মোড় কেন্দ্রীয় চৌমাশিয়া বাজারের কাঁচা তরিতরকারির ব্যবসায়ী শ্রীসবুজ কুমার ভৌমিক বলেন আজকের আমি কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি ২০০-২২০ টাকা কেজি। শাপাহার- দীঘির হাটের ব্র্যাক কর্মী মালা রানী গতকাল বৃহস্পতিবার ১২০ টাকা কেজি দরে কিনেছি কিন্তু আজ কাঁচা মরিচের দাম ২৪০ টাকা এক রাতেই সব উল্টো পাল্টা বাজার।

খোঁদ্দনারায়নপুর পাল পাড়ার শ্রীকোমল মোহন্ত একজন বারো-ভাজা বাদাম ভিজা বুট মাখা ভাজা বিক্রেতা বলেন আমি প্রায় ৩০-৪০ বছর ধরে মেলা ও হাট এই বার ভাজ মাখা বিক্রি করে এসেসি, আজ শুক্রবার নওহাটা মোড় চৌমাশিয়া কেন্দ্রীয় বাজার এক কেজি কাঁচা মরিচ কিনতে এসে কাঁচা মরিচের দাম ২২০-২৪০ কেজি শুনে আমার মাথায় হাত। আজ আমি কাঁচা মরিচ কিনবোনা কালকা নওগাঁ বাজারে বেশি করে কাচা মরিচ পিয়াজ ও আদা কিনে আনবো তিনি জানান।

নওগাঁ সিও অফিস বাজারের খুচরা বিক্রেতা সাগর আলী বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে এই বাজারে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচা মরিচ। আজ ভোরে পৌর পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হয়েছে ২০০ টাকা কেজিতে। সেগুলো এখন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। বৃষ্টি কমলে দাম স্বাভাবিক হবে।

সদর উপজেলার ব্রুজরুক আতিতা গ্রামের মরিচ চাষি রাসেল হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও হাটে গিয়ে মরিচ বিক্রি করতে হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে। জমি থেকে মরিচ শ্রমিকদের মজুরির টাকাও উঠতো না। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গাছের ক্ষতি হয়েছে। মরিচ তুলা যাচ্ছে না। 

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ৯৬৫ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে।

সম্পর্কিত

পোস্টটি শেয়ার করুন

নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৭ দিনের ব্যবধানে ২০-৩০ টাকার কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা কেজি

আপডেট ০৩:৩৬:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

নওগাঁর ১১ উপজেলার হাটবাজারে হঠাৎ করে বেড়েছে২০-৩০ টাকার কাঁচা মরিচের দাম ২৪০ টাকা কেজি। ৭ দিনের ব্যবধানে প্রায় ৬ থেকে ৮ গুন দাম বেড়েছে এই কাঁচা পণ্যটির । বর্তমানে খুচরা বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নওগাঁ পৌর খুচরা বাজার ও সিও অফিস ও নওগাঁ নওহাটার মোড় চৌমাশিয়া বাজারে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে জমি থেকে কাঁচামরিচ তুলতে পারছেন না চাষিরা। এছাড়াও জমিতে পানি জমে মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর কারণে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে গেছে। এতে দাম কিছুটা বেড়েছে।

জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও নওগাঁর বিভিন্ন হাটবাজারে কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা আর খুচরা বাজারে ৩০ থেকে ৪০টাকা কেজি দরে। বর্তমানে সেই কাঁচামরিচ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা আর খুচরা বাজারে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে। এদিকে কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা।

শহরের সিও অফিস বাজার করতে আসা মাসুদ রানা বলেন, যে মরিচ এক সপ্তাহ আগে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনেছি ,সেই মরিচ আজ ২৪০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। কালকেও ১২০টাকা কেজি নিয়ে গেছি অথচ আজকে দ্বিগুণ দাম। বাজারের যে অবস্থা মনে হচ্ছে কাল পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি হবে।

বাজার করতে আমা আরেক ক্রেতা ফিরোজ হোসেন বলেন, বর্ষার কারণে গাছ নষ্ট ও সরবরাহ কম হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতি তো এখনো তৈরি হয়নি যে বাজারে মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। নিয়মিত বাজারে অভিযান চালানো হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে না।

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ৯ নম্বার চেরাগপুর ইউনিয়ানের ৯ নম্বার ওর্য়াডের চৌমাশিয়া, নওহাটা মোড় কেন্দ্রীয় চৌমাশিয়া বাজারের কাঁচা তরিতরকারির ব্যবসায়ী শ্রীসবুজ কুমার ভৌমিক বলেন আজকের আমি কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি ২০০-২২০ টাকা কেজি। শাপাহার- দীঘির হাটের ব্র্যাক কর্মী মালা রানী গতকাল বৃহস্পতিবার ১২০ টাকা কেজি দরে কিনেছি কিন্তু আজ কাঁচা মরিচের দাম ২৪০ টাকা এক রাতেই সব উল্টো পাল্টা বাজার।

খোঁদ্দনারায়নপুর পাল পাড়ার শ্রীকোমল মোহন্ত একজন বারো-ভাজা বাদাম ভিজা বুট মাখা ভাজা বিক্রেতা বলেন আমি প্রায় ৩০-৪০ বছর ধরে মেলা ও হাট এই বার ভাজ মাখা বিক্রি করে এসেসি, আজ শুক্রবার নওহাটা মোড় চৌমাশিয়া কেন্দ্রীয় বাজার এক কেজি কাঁচা মরিচ কিনতে এসে কাঁচা মরিচের দাম ২২০-২৪০ কেজি শুনে আমার মাথায় হাত। আজ আমি কাঁচা মরিচ কিনবোনা কালকা নওগাঁ বাজারে বেশি করে কাচা মরিচ পিয়াজ ও আদা কিনে আনবো তিনি জানান।

নওগাঁ সিও অফিস বাজারের খুচরা বিক্রেতা সাগর আলী বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে এই বাজারে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচা মরিচ। আজ ভোরে পৌর পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হয়েছে ২০০ টাকা কেজিতে। সেগুলো এখন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। বৃষ্টি কমলে দাম স্বাভাবিক হবে।

সদর উপজেলার ব্রুজরুক আতিতা গ্রামের মরিচ চাষি রাসেল হোসেন বলেন, এক সপ্তাহ আগেও হাটে গিয়ে মরিচ বিক্রি করতে হয়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে। জমি থেকে মরিচ শ্রমিকদের মজুরির টাকাও উঠতো না। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে গাছের ক্ষতি হয়েছে। মরিচ তুলা যাচ্ছে না। 

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ৯৬৫ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে।