বিশ্বকাপ দেখা হবে না? ইরানি সমর্থকদের স্বপ্নে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হানা

- আপডেট ০৪:১৪:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
- / ৪৯ বার পঠিত হয়েছে
আর মাত্র এক বছর পর শুরু হবে ২০২৬ বিশ্বকাপ। প্রিয় দল ‘টিম মেলি’র খেলা গ্যালারিতে বসে দেখার স্বপ্ন অনেক ইরানি ফুটবলপ্রেমীরই। কিন্তু সেই স্বপ্নে বড় ধাক্কা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা।
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন, যার মধ্যে ইরানও রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে আগামী সোমবার থেকে।
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজন করছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। তবে বেশির ভাগ ম্যাচ, এমনকি ফাইনালটিও অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রে। ফলে নিষেধাজ্ঞার মানে দাঁড়ায়—যুক্তরাষ্ট্রে খেলা পড়লে মাঠে বসে প্রিয় দলের খেলা দেখার সুযোগ থাকছে না ইরানিদের। ইরান এরইমধ্যে জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপে।
তেহরানের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সোহরাব নাদেরি আফসোস করে বলেন, ‘আমার বন্ধুরা আর আমি বহু বছর ধরেই স্বপ্ন দেখছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপে টিম মেলির খেলা দেখব। দল যখন কোয়ালিফাই করল, মনে হলো এ এক জীবনে একবারের সুযোগ। কিন্তু রাজনীতির কারণে সেই স্বপ্ন ভেঙে গেল।’
২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ মাঠে বসে উপভোগ করেছিলেন নাদেরি। সেবার গ্রুপ পর্বে যুক্তরাষ্ট্র ১-০ গোলে হারিয়েছিল ইরানকে।

নতুন নিষেধাজ্ঞা অ্যাথলেটদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না, তবে সাধারণ দর্শকদের জন্য কোনো ছাড় নেই। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, সম্প্রতি কলোরাডোয় একটি ইহুদি বিক্ষোভে হামলার ঘটনায় একজন অবৈধ অভিবাসীর সম্পৃক্ততা রয়েছে—এ ঘটনার পরই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলছে। চুক্তি হলেও নিষেধাজ্ঞা শিথিল হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত।
এর মধ্যেই ইরানি সমর্থকদের অনেকে আশাবাদী, কূটনীতিকদের যেটা করা কঠিন, সেটাই হয়তো সম্ভব করবে ফুটবল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বকাপ হতে পারে সম্পর্কোন্নয়নের বড় মঞ্চ।

১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপের ঐতিহাসিক ম্যাচে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের খেলোয়াড়েরা পরস্পরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন, যা আজও স্মরণীয় এক মুহূর্ত। সেবার ইরান জিতেছিল ২-১ গোলে।
২০২৬ বিশ্বকাপে দুই দল আবার মুখোমুখি হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে অনেকেই চাইছেন, মাঠেই যেন গলে যায় দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক বরফ।